অর্কিডের ভূবনে আপনাকে স্বাগতম!

অর্কিড ফুলের ছোঁয়ায় আপনার জীবন হোক আরও অর্থপূর্ণ ও নান্দনিক-শুভ সালাতিন

ছাদে বা বারান্দায় অর্কিড চাষ করবেন কিভাবে?

অর্কিডের ছোঁয়ায় আপনার গৃহকোন হোক নান্দনিক। অর্কিড পালন করতে চান, কিন্তু, কিভাবে শুরু করবেন? কি জাতের অর্কিড ভালো? কত দাম? রোগ-বালাই দুর করবেন কিভাবে? সার ও পানি দেওয়ার নিয়ম-কানুন ? সব প্রশ্নের উত্তর পাবেন এখানে...

অর্কিডের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ?

অর্কিডের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ কোনটা? কি জাতের অর্কিড সহজেই লালন পালন করা যায়? অর্কিড ঘর, টব, মিডিয়া কি ও কেন প্রয়োজন? অর্কিডের পাতা কেন হলুদ হয়ে যাচ্ছে কেন? কনফিউজড?? সমাধান এখন আপনার হাতের নাগালে..

অর্কিড পালন ? সেতো অনেক খরচের বিষয় !

আপনি কি জানেন ? একটি অর্কিড থেকে সহজেই একাধিক অর্কিড পেতে পারেন। এখানে পাচ্ছেন বীজ থেকে কিংবা কঁচি বাড থেকে নতুর অর্কিড উৎপাদনের কৌশল। আপনার সকল প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য আমি রয়েছি..

বুঁনো অর্কিডের খোঁজে

চলুন, ঘুরে আসি বাংলাদেশের পাহাড় আর জংগলে, যেখানে গাছের ডালে ঝুলে আছে অগণিত নমা না জানা অগণিত অর্কিড। এই বুনো অর্কিডের সৌন্দর্য আপনাকে শহুরের একঘেয়েমী জীবন থেকে একটানে তুলে নিয়ে যাবে সৌন্দর্যের এক অনাবিল ভূবনে। ফ্রেম বন্দি করবো অনিন্দ্য সুন্দর মুহূর্তগুলো। অর্কিডের ভূবনে আপনি স্বাগত !

Saturday, December 3, 2016

অর্কিড বিষয়ক প্রশ্ন ও উত্তর

অর্কিড বিষয়ক প্রশ্ন ও উত্তর

১. ঘরে কোথায় অর্কিড রাখা ভালো?
অর্কিড রাখতে হয় ঘরের ভিতরে জানালার পাশে। দক্ষিণ কিংবা পূর্বমুখী জানালা বেশী উপকারী। পশ্চিমমুখী জানালায় সাধারণত বিকেলের দিকে গরম অনূভুত হয় আর উত্তররর জানালা বেশ অন্ধকার থাকে। জানালায় পর্দা থাকা ভালো, এতে মাত্রা সহনীয় থাকে। অতিরিক্ত আলোয় পাতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়- তাই ঋতুভেদে অর্কিড গাছের অব®হান পরিবর্তন করা বাঞ্ছনীয়। গাছকে জানালার কাছে বা দুরে সরিয়ে আলোর তারতম্য ঘটানো যায়। মনে রাখতে হবে অর্কিডের পাতা যেন জানালার গ্লাসকে স্পর্শ না করে। শীতকালে অর্কিডের পাতা জানালা স্পর্শ করলে জমে যেতে পারে।

পাতার রঙ দেখে বোঝা যায় গাছটি সঠিক আলো পাচ্ছে কি না? পাতার রঙ যদি গাঢ় সবুজ হয় তাহলে গাছটি পর্যাপ্ত আলো পা্েছ না। ঘাসের মতো সবুজ রঙ ( হাল্কা অথবা মিডিয়াম সবুজ সাথে হলদে আভা ) হলে বুঝতে হবে অর্কিড গাছটি ফুল ফোটাঁনোর জন্য পর্যাপ্ত আলো পাচ্ছে।

২. অর্কিডে কিভাবে পানি দিব?

অর্কিডে অতিরিক্ত পানি দেওয়ার চেয়ে খুব কম মাত্রায় দেওয়া ভালো । অতিরিক্ত পানিতে শিকড় পচে যায়। অতিরিক্ত পানির ফলে গাছের পাতা ঝরে যেতে পারে এমনকি অর্কিড গাছটি মরেও যেতে পারে। সবচেয়ে প্রচলিত মতে গাছ শুকিয়ে যাওয়ার এক দিন পূর্বে পানি দিনর্।  শুষ্ক অর্কিডসহ টবের ওজন সাধারণত কম হবে ভেজা থাকার চেয়ে। ভেজা ও শুকনো টবের ওজন ভালোভাবে বুঝতে পারলে পানি দেওয়া সহজ হয়। একটি পেন্সিল চোখা করে ছেঁচে নিন এবং পেন্সিলটি টবের ভিতর মিডিয়াতে ঢুকিয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। যদি পেন্সিলসহ শীশটি আর্দ্র মনে হয়, তাহলে পানির প্রয়োজন নেই। টবের মিডিয়ামের ভিতর হাত দিলে যদি আর্দ্রতা অনূভূত হয়, তাহলে পানি দেওয়ার প্রয়োজন নাই।

সকালে পানি দেওয়া সবচেয়ে ভালো। সকালে পানি দিলে সারাদিনে গাছটি পযাপ্ত পানি টেনে নিবে এবং দিনের তাপমাত্রায় অতিরিক্ত পানি তাপে শোষিত হবে। রাতে পানি দেওয়া উচিৎ নয়। এতে ফাঙাসের উপদ্রব হতে পারে। ঘরের তাপমাত্রা যদি বেশী হয় এবং আর্দ্রতা কম হয় (সাধারণত গ্রীষ্মকালে) তাহলে বেশ কয়েকবার পানি দেওয়া যেতে পারে। ঘওে পালিত অর্কিডের ক্ষেত্রে টবসহ অর্কিডটি রান্না ঘরের সিংকে মিনিট সাতেক ডুবিয়ে রেখে তুলে ফেলুন।

কিভাবে ভালো অর্কিড কিনবো?

একটি অর্কিড কেনার সময় যেসব বিষয়ে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে সেগুলো হলো:-
(১) মিডিয়াতে অর্কিডটির শিকঁড় থাকতে হবে। গাছটি যেন মিড়িয়াতে শক্তভাবে দাড়িয়ে থাকে। চারা কেনার চেয়ে কলিসহ ফুল ফোঁটা অর্কিড গাছ কেনা ভালো। পাতার রঙ মধ্যম সবুজ কিনা দেখতে হবে। দৃশ্যমান কীট-পতংগমুক্ত হতে হবে।

(২) ফুল যেন টাটকা থাকে । ফাংগাসের স্পট থাকা চলবে না। সব ফুল ফঁটে গেছে, এরকম অর্কিডের চেয়ে দু-একটি কলি রয়েছে এরকম অর্কিড গাছ কেনাই শ্রেয়। সব ফুল ফোটা থাকলে, ফুলের আয়ুকাল বোঝা যায় না। পাত্র যেন পরিষ্ক্রা পরিচ্ছন্ন থাকে। টবের গায়ে শ্যাওলা থাকলে পরিষ্কার করে দিতে বলুন বিক্রেতাকে।

(৩) কেনার সময় বিক্রেতার সাথে দরকষাকষি করুন। কখনও একদামে কিনবেন না।

অর্কিড কি পরগাছা জাতীয় গাছ ?

অর্কিড পরগাছা নয় । অর্কিড পুরানো গাছ, পাথর খন্ড বা গাছের ডাল আঁকড়ে ধরে আদ্রতা শুষে নেয়। অর্কিড পানি,বাতাস ও আলো থেকে খাবার তৈরী করে। অর্কিডকে যে গাছ ধারন করে, তা মরে যায় না।এ থেকেই প্রমাণিত হয় অর্কিড পরগাছা নয়।

অর্কিড পালন কি খুবই কঠিন ?

আপনার যদি একখন্ড খোলা বারান্দা বা ছাদ থাকে , তাহলে খুব সহজেই অর্কিড চাষ করা যায়।
অর্কিড চাষের জন্য প্রয়োজন আলো, বাতাস আর তরল সার আর যতœ। নিয়মকানুন সঠিকভাবে
জানলে অর্কিড সহজেই চাষ করা যায়।

আমাদের দেশে কোন অর্কিডগুলো জনপ্রিয়?

আমাদের দেশে বনে-বাদাড়ে আম, বেল, জাম,তেতুল ও বিশাল আকারের পুরানো রেইনট্রি-তে দেশী অর্কিড ঝুলে থাকতে দেখা যায়। দেশী অর্কিডের মধ্যে রয়েছে ভ্যান্ডা,পিয়েরারডি,ভ্যান্ডাটারেট,এরাডাউস,ফক্সটেইল। এই অকিডগুলো বাগানের বেড়া দেওয়ার জন্য আর্দশ।মার্চ মাস থেকে ফুল ফোঁটা শুরু হয়।

বিদেশী অর্কিডগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্যাটালিয়া, অনসোডিয়াম,ভ্যান্ডা,ফেলোনপসিস,ড্যান্সিংডল ইত্যাদি। 

অর্কিড  কি জংগলী ফুল?

বেশ কিছু অর্কিড এসেছে জংগল থেকে। বিভিন্ন দেশে তাদের নিজস্ব অর্কিড আছে। থাইল্যান্ড,মালয়েশিয়া,ভারত,ভূটান,বাংলাদেশের নিজস্ব অর্কিড রয়েছে।
আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড-এর নিজস্ব অর্কিড রয়েছে।



Tuesday, November 1, 2016

মোকারা অর্কিড লালন পালন ও পরিচর্যা

মোকারা একটি হাইব্রিড অর্কিড। বাংলাদেশে ড্যানড্রবিয়ামের পর মোকারা অর্কিড বেশ জনপ্রিয়। এই অর্কিড লালন পালন ও পরিচর্যা বেশ সহজ । নাসারীতে একটি  পূর্ণবয়স্ক ফুল ধরা অর্কিডের দাম ৬০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে। ঠিক মতো পরিচর্যা করতে পারলে সারা বছরই ফুল দেয়। মোকারা অর্কিড কেনার সময় এর মূল ও ফুলের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে । মূল যেন সু®হ্য সবল থাকে। ফুল সহ অর্কিড কেনাই ভাল।



ঘরে ও অফিসে সহজেই মোকারা অর্কিড পালন করা যায়। সাধারণত পূর্বমুখী জানালার পাশে রাখতে পারলে সবচেয়ে ভাল হয়। ভোরের প্রথম কিরনে এই অর্কিড জীবণীশক্তি লাভ কওে ।

তাপমাত্রা : এই অর্কিড দিনের বেলায় বেশী তাপ সহ্য করতে পারে না । দিনের বেলায় সাধারণত ১৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এবং রাতের বেলায় ১৩ ডিগ্রিী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা এই অর্কিডের জন্য আর্দশ। বাংলাদেশে সাধারণত শীতকালে এই তাপমাত্রা থাকে। চিন্তার কারণ নেই, বাংলাদেশের তাপমাত্রাও এই অর্কিডের জন্য সহনীয়। আর্দ্রতা বেশ পছন্দ মোকারা অর্কিডের। ৮০% আদ্রতা এই অর্কিডের জন্য আর্দশ।




পানি দেওয়া: অন্যান্য প্রজাতির অর্কিডের চেয়ে মোকার পানি একটু বেশী লাগে। সকালে পানি দিন। বেশ কয়েক মিনিট ধরে গাছের শিকড় পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিন। গরমকালে সপ্তাহে বেশ কয়েকবার পানি দিতে হবে। চারা গাছে পানি দেওয়ার খেয়াল রাখতে হবে যেন শিকড়ে পানি জমে না থাকে। শীতকালে পানির প্রয়োজন কম পড়ে। তবুও হাত দিয়ে শিকড স্পর্শ করলে যদি শুকনো মনে হয়, তাহলে পানি দিতে হবে।

সার : সার প্রযোগে এই প্রজাতির অর্কিডের বৃদ্ধি ভাল হয়। গরমের সময় সপ্তাহে একদিন সার দেওয়া ভালো। শীতকালে দুই বা তিন সপ্তাহ পরপর সার দেওয়া যেতে পারে, কারণ শীতকালে অর্কিডের বৃদ্ধি কম হয়। ২০ ভাগ নাইট্রোজেন(ইউরিয়া), ২০ ভাগ ফসফরাস ও ২০ ভাগ পটাশিয়ামের তরল মিশ্রন এই অর্কিডের জন্য আর্দশ। সার দেওয়ার সময় বোতলের লেবেলের নির্দেশাবলী অনূসরণ করুন।

পট বা টব পাল্টানো: মোকারা অর্কিড শিকড় নাড়াচাড়া পছন্দ করে না। কিন্তুু শিকঁড় যদি পটের বাইরে চলে যায় অথবা মিডিয়া যদি পুরানো ও ভেঙে যায় তাহলে সে ক্ষেত্রে পট পাল্টানো জরুরী। টব বড় হলে ভাল হয়।


Monday, October 31, 2016

পৃথিবীর সবচেয়ে দামী অর্কিড

পৃথিবীতে প্রায় ২০.০০০ প্রজাতির অর্কিড রয়েছে । কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে দামী অর্কিড কোনটি?  সাধারণত দামী অর্কিড মাত্রই দুলর্ভ অর্কিড। পৃথিবীর সবচেয়ে দামী অর্কিডের নাম রথচাইল্ডস ল্যাডি সিøপার। দুলর্ভ অর্কিড সংগ্রহকারীরা এই অর্কিডের দাম নিয়ে মাথা ঘামায় না । এই অর্কিডের একটি স্টেমের (ফুলসহ ডাল) দামীই ৬০০০ মার্কিন ডলার। এই অর্কিড জন্মাতে ও ফুল ফোটাতে ১৫ বছরের বেশী সময় লাগে। রথচাইল্ডস ল্যাডি সিøপার অর্কিড ফুলের সৌন্দর্য অতুলনীয়। এই অর্কিড অত্যন্ত দুর্লভ।


Rothschild’s Slipper
মালয়েশিয়ার সাবাহ প্রদেশে এই অর্কিডের  ®হানীয় নাম ‘সুমাজু’ । সাবাহ প্রদেশের একটি আঞ্চলিক নাচের নাম ‘সুমাজু’। অর্কিড ফুলটির দুই দিকে দুইটি প্রসারিত ও আন্দোলিত পাপঁড়ি দেখলে সুমাজুর নৃতরত রমনীর মতো লাগে। পাপঁড়িতে সাদা ফুটকি রয়েছে। স্টেম বা ডাল লাল রঙের। ডালে তিন থেকে চারটি ফুল ধরে,অবশ্য ৬টি ফুলও ধরতে দেখা যায়।।

১৯৮৭ সালে  রথচাইল্ডস মালয়েশিয়ার কিনাবালু রেইনফরেষ্ট-এ এই অর্কিড আবিষ্কার করেন। সমুদ্রপৃ®ঠ হতে ৫০০ থেকে ১২০০ মিটার উচ্চতায় এই অর্কিড জন্মায়, তাছাড়া মরা নদী ও কিøফের আশেপাশে মরা পাতা ও ডালপালায় এই অর্কিড জন্মায়। 

বৈজ্ঞানিক নাম :  Paphiopedilum rothschildianum

অন্যান্য জনপ্রিয় নাম: কিনাবালুর স্বর্ণ ।

Tuesday, October 25, 2016

সুন্দরবনের বুনো অর্কিড


পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন । সুন্দরবনে প্রায় ১৭ টি বিভিন্ন প্রজাতির অর্কিড পাওয়া যায়। গাছের উচুঁ ডালে ঝুলে থাকে অনিন্দ্য সুন্দর অর্কিড। আসুন কিছুক্ষণ অনুভব করি এইসব বুনো অর্কিডের সৌন্দর্য।

Acampe ochracea

Acampe papillosa
 Acampe rigida
Bulbophyllum roxburghii
Dendrobium anceps
 Dendrobium aphyllum
Geodorum densiflorum
 Oberonia gammiei

 
Platenthera insectifera
Trias oblonga
 Vandopsis gigantea
               

অর্কিড পালন অনুষংগ

অর্কিড নেট হাউজ : অর্কিডকে  সূর্যের সরাসরি আলো থেকে রক্ষা করার জন্য নেট বা জাল ( প্লাষ্টিক) দ্বারা ঘর তৈরী করা হয়। এতে আলো ছায়া পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তাপমাত্রাও কম থাকে এবং আদ্রতাও বেশীক্ষণ ধরে রাখা যায়।  বাতাসের প্রবাহ নিশ্চিত করার জন্য চারপাশর্^ খোলা রাখা হয়। এই প্লাষ্টিকের নেট পাওয়া যাবে ঢাকার কাওরানবাজারের হার্ডওয়ার দোকানে। অর্কিডের নীচে কিছু ফার্ণ রাখলে আদ্রতা বজায় থাকে ।



অর্কিডের টব : নার্সারীতে আজকাল অনেক ধরনের অর্কিড টব পাওয়া যায়। মাটির টবে অনেকগুলো ছিদ্র থাকে। নার্সারীতে প্লাষ্টিক টব ও পাওয়া যায়। ছিদ্র থাকার কারনে বাতাস সহজে প্রবাহিত হতে পারে এবং পানি সহজে  বের হতে পারে। টবের পাত্রের আকারভেদে গাছের বৃদ্ধির তারতম্য হয়। সাধারণত বড় টবে গাছ ভাল বৃদ্ধি পায় । ছোট টবে ফুল বেশী ধরে। মাটির পাত্রে শৈবাল বা শ্যাওঁলা জন্মে। পানিও দিতে হয় বেশী,তবে মাটির পাত্র পানি ধরে রাখে বেশীক্ষন। প্লাষ্টিক পাত্রে সহজে শৈবাল জন্মে না । অধিকদিন টিকে। কাঠের পাত্রে ফাঁক বেশী থাকায় বায়ু চলাচল বেশী হয় কিন্তু, পানি বেশী দিতে হয়।



অর্কিড মিডিয়া: অর্কিড মিডিয়া বলতে যার উপর অর্কিড জন্মে। নারিকেলের ছোবড়া মিডিয়া হিসাবে বেশ কার্যকরী। বাংলাদেশে নারিকেলের ছোবড়া সহজলভ্য। ঝাশা ইটের খোয়া, কাঠকয়লা ও কাঠের বাকলের টুকরা ব্যবহার করা হয়। টবে বসানোর পূর্বে মিডয়াকে একটি বড় বালতিতে পানি ও ডায়থেন-এস-৪৫/রিডোমিল এমজেড  মেশানো পানিতে (প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম  ডায়থেন-এস-৪৫/রিডোমিল এমজেড) ২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। গাছ লাগানোর পূর্বে গাছকে এই মিশ্রণের মধ্যে ২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে গাছ ছত্রাকমুক্ত থাকে।



লক্ষ্যণীয়: মিডিয়া টবে এমনভাবে বসাতে হবে যাতে গাছ দৃঢ়ভাবে দাড়িয়ে থাকে।  পানি ও তরল সার সহজেই প্রবাহিত হতে পারে। পানি সহজেই বের হয়ে যেতে পাওে, গাছের গোড়ায় আটকে না থাকে। সহজেই বায়ু চলাচল করতে পারে। টবের মিডিয়াতে গাছ লাগানোর পর তাঁর দিয়ে ঝুলিয়ে দিতে হবে।                                                                                                                                                             

Monday, October 24, 2016

ড্যানড্রবিয়াম

অর্কিডের একটি সুবিশাল প্রজাতি হলো ড্যানড্রবিয়াম। সুইডিশ উদ্বিদবিজ্ঞানী ওলফ সোর্য়াজ ১৭৯৯ সালে এই অর্কিড আবিষ্কার করেন। ড্যানড্রবিয়াম অর্কিডের ১২০০-এর অধিক প্রজাতি রয়েছে। এই প্রজাতির অর্কিডের আবাস®হল হলো দক্ষিণ,পূর্ব এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায়,বিশেষ করে,চীন,জাপান,ভারত,ফিলিপাইন,ইন্দোনেশিয়া,অষ্ট্রেলিয়া,নিউ গিনি,ভিয়েতনাম এবং প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপপুঞ্জে। ড্যানড্রবিয়াম শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ ‘ড্যানড্রো’ বা গাছ এবং ‘বায়োস’ বা প্রাণ থেকে, যার অর্থ ‘ যে গাছে বাস করে’।
বাংলাদেশের আবহাওয়ায় ড্যানড্রবিয়াম খুব জন্মে। এই অর্কিডের ফুল ছোট,মাঝারী ও বড় আকারের হয়। ফুলের রঙে আছে বৈচিত্র। সাদা,হলদে,সবুজ,লাল রঙের ফুল মনকে মোহিত করে। নার্সারীতে এই অর্কিডের প্রাধান্য বেশী। তুলনামূলক দাম কম থাকায় বিক্রিও ভাল। ড্যানড্রবিয়াম মূলত এপিফাইটিক অথাৎ গাছে জন্মায়। আবার কিছু কিছু ড্যানড্রবিয়াম লিথোফাইটিক অথাৎ পাথরের ভাঁজে জন্মায়। হিমালয় পর্বতমালায় যেমন এই অর্কিড দেখা যায়, তেমনি গ্রীষ্মমন্ডলীয় বনাঞ্চল এমনকি অষ্ট্রেলিয়ান মরুভূমির শুষ্ক আবহাওয়াতেও এই অর্কিড দেখা যায়।

সারা গ্রীষ্মকালেই ড্যানড্রবিয়াম অর্কিডের ফুল ফোটে কিন্তু, শীতকালে বিশ্রাম নেয়।


Thursday, October 20, 2016

অর্কিডের যত্ন-১


২০১৬ সালে আগাঁরগাও-এর জাতীয় বৃক্ষমেলায় গিয়েছিলাম। শুক্রবার। মেলায় বেশ ভীড়। বুক্ষপ্রেমিকদের কোলাহল চারিদিকে। ঘুরতে ঘুরতে চলে এলাম দীপ্ত অর্কিডের স্টলে। স্টলে সুন্দর করে সাজানো মোকারা, ড্যানড্রোবিয়াম,ভ্যান্ডা অর্কিড। স্টলে বেশ ভীড়। কেনার চেয়ে দেখার লোকই বেশী। বিক্রিও হচ্ছে টুকটাক। একটি ফুল ধরা মোকারা অর্কিডের দাম ৮০০ টাকা। ড্যানড্রোবিয়াম অর্কিড বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। ড্যানড্রোবিয়াম চারা বিক্রি হচ্ছে ৫০  টাকা পিছ। কাঁচের বোতলে টিস্যূ কালচারকৃত ড্যানড্রোবিয়াম চারা অর্কিড বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকা। বিনামূল্যে বিতরণ হচ্ছে অর্কিড লালনপালনের এক পাতার নির্দেশিকা। নির্দেশিকাটি বেশ তথ্যবহুল। আগ্রহীদের জন্য এখানে তা তুলে দেওয়া হলো। আশা করি কাজে লাগবে।

১.পানি দেওয়া :

শুষ্ক মৌসুমে কমপক্ষে দুইবার আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত পানি দ্বারা ভালভাবে স্প্রে করে ভিজিয়ে দিতে হবে (সকালে ও দুপুরে)। অন্য মৌসূমে (বর্ষাকাল ছাড়া) শুধু একবার সকালে দিতে হবে।

২. সার দেওয়া :
সপ্তাহে একদিন সকালে এক লিটার পানির সংগে ৬ গ্রাম সার মিশ্রিত পানি একইভাবে স্প্রে করে দিতে হবে ( সকালে দেওয়া ভালো)।
সার=৬ গ্রাম ( ২ গ্রাম ইউরিয়া,২ গ্রাম টিসপি, ২ গ্রাম এমপিও এর মিশ্রন)।

৩. ঔষধ দেওয়া:
প্রতি ১০ দিন অন্তর এক লিটার পানির সংগে ২ গ্রাম/মিলি হারে স্প্রে করতে হবে।
ঔষধের নাম: ক.  ডারবেন এম ৪৫ খ. রিডোমিল গোল্ড গ. ব্যাবিষ্টিন ইত্যাদি।
( যেকোন একটি, ঔষধ বিকেলে স্প্রে করা অধিক কার্যকারী)।

৪. বিষ স্প্রে:
গাছে কিংবা ফুলে পোকা মাকড়ের উপদ্রব লক্ষ্য করা গেলে ১ লিটার পানিতে ২ গ্রাম/মিলি হারে একইভাবে বিকেলে স্প্রে করতে হবে।
বিষের নাম: ক. টলষ্টার খ. এডমায়ার গ. সেভিন-৮৫ ইত্যাদি (যেকোন একটি)।