অর্কিডের ভূবনে আপনাকে স্বাগতম!

অর্কিড ফুলের ছোঁয়ায় আপনার জীবন হোক আরও অর্থপূর্ণ ও নান্দনিক-শুভ সালাতিন

ছাদে বা বারান্দায় অর্কিড চাষ করবেন কিভাবে?

অর্কিডের ছোঁয়ায় আপনার গৃহকোন হোক নান্দনিক। অর্কিড পালন করতে চান, কিন্তু, কিভাবে শুরু করবেন? কি জাতের অর্কিড ভালো? কত দাম? রোগ-বালাই দুর করবেন কিভাবে? সার ও পানি দেওয়ার নিয়ম-কানুন ? সব প্রশ্নের উত্তর পাবেন এখানে...

অর্কিডের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ?

অর্কিডের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ কোনটা? কি জাতের অর্কিড সহজেই লালন পালন করা যায়? অর্কিড ঘর, টব, মিডিয়া কি ও কেন প্রয়োজন? অর্কিডের পাতা কেন হলুদ হয়ে যাচ্ছে কেন? কনফিউজড?? সমাধান এখন আপনার হাতের নাগালে..

অর্কিড পালন ? সেতো অনেক খরচের বিষয় !

আপনি কি জানেন ? একটি অর্কিড থেকে সহজেই একাধিক অর্কিড পেতে পারেন। এখানে পাচ্ছেন বীজ থেকে কিংবা কঁচি বাড থেকে নতুর অর্কিড উৎপাদনের কৌশল। আপনার সকল প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য আমি রয়েছি..

বুঁনো অর্কিডের খোঁজে

চলুন, ঘুরে আসি বাংলাদেশের পাহাড় আর জংগলে, যেখানে গাছের ডালে ঝুলে আছে অগণিত নমা না জানা অগণিত অর্কিড। এই বুনো অর্কিডের সৌন্দর্য আপনাকে শহুরের একঘেয়েমী জীবন থেকে একটানে তুলে নিয়ে যাবে সৌন্দর্যের এক অনাবিল ভূবনে। ফ্রেম বন্দি করবো অনিন্দ্য সুন্দর মুহূর্তগুলো। অর্কিডের ভূবনে আপনি স্বাগত !

Thursday, October 27, 2022

আমার ছাদে অর্কিডের বাগান

 আমার ছাদে অর্কিডের বাগান। অর্কিডের জন্য ছাদের আবহাওয়া খুব ভালো। আপনার বাসার ছাদ হতে পারে অর্কিডের জন্য আর্দশ। খেয়াল রাখতে হবে , ছাদের চারপাশ যেন খোলামেলা হয়। বিশেষ করে পূর্ব দিক যেন খোলা থাকে।



ভোরের আলো অর্কিডের জন্য খুবই উপকারী। অর্কিডের জন্য মাচা তৈরী করতে হবে। বাঁশের মাচা তেমন ভালো হয় না।  রোদ-বৃষ্টিতে বাঁশ পচেঁ  মাচা ধসে পড়তে পারে। সেজন্য  রড় দিয়ে বানালে অনেকদিন টিকে থাকবে।  পানি নিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্হা রাখতে হবে। গ্রাউন্ড অর্কিড থাকলে নিয়মিত আগাছা,শ্যাওলা পরিষ্কার করতে হবে।

Friday, April 29, 2022

Coelogyne orchid (pronounced See-loj'in-ee) সিলোজিনি অর্কিড

সিলোজিনি এপিফাইটিক গ্রোত্রের অর্কিড। পাথর,মাটি এবং মরা গাছের বাকলে এই অর্কিড জন্মে। হিমালয়ের পাদদেশে এবং এশিয়ার অনেক দেশে (ভারত,চীন,ইন্দোনেশিয়া,ফিজি দ্বীপপুন্জে) এই অর্কিড পাওয়া যায়। বাংলাদেশে বান্দরবান,রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়ি বনে এই অর্কিড জন্মে।একটি মোটা,ডিম্বাকৃতি সুডোবাল্ব-এর উপরে সূচাকৃতি দুটি পাতা  এবং একটি লম্বা ফুলের স্পাইক দেখতে পাওয়া যায়। প্রজাতি ভেদে ফুলের আকার ছোট থেকে বড় হতে পারে। সাদা এবং সবুজ রঙের ফুল বেশি দেখা যায়,কিছু প্রজাতি অর্কিডের গন্ধ আছে। 

                                                                      Coelogyne orchid
 

শীতে এবং বসন্তের সূচনালগ্নে প্রচুর ফুল ফুটে। এই অর্কিড খোলা বাতাস পছন্দ করে। তাই যেখানে প্রচুর বাতাস রয়েছে সেখানে রাখতে হবে। গরমকালে প্রতিদিন পানি দিতে হবে। পানি দেওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে কুঁড়ি বা ফুলে পানি না লাগে। পানি লাগলে খয়েরী দাগ পড়ার সম্ভবনা থাকে।

Sunday, February 6, 2022

গ্রাউন্ড অর্কিড

ইদানিং গ্রাউন্ড অর্কিড শৈখীন বাগানীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। গ্রাউন্ড অর্কিডের দাম বেশ চড়া। বেশীর ভাগই থাইল্যান্ড বা চীন থেকে আমদানীকৃত। উচ্চমূল্যের জন্য এই গ্রাউন্ড অর্কিড সবাই কিনতে পারে না। গ্রাউন্ড অর্কিড অনেকে শখ করে কিনেন, কিন্তুু বাঁচাতে পারেন না। অথচ সামান্য যত্ন করলে এই অর্কিড সারাবছর ফুল দিয়ে আপনার মনকে সতেজ রাখবে। আসুন, দেখা যাক, কিভাবে যত্ন করলে গ্রাউন্ড অর্কিড আপনাকে নিরাশ করবে না  এবং অকৃপণভাবে সারা বছর জুড়ে ফুল উপহার দিবে। 


 

১. সুস্থ গাছ নির্বাচন : গাছটি সতেজ কিনা দেখে নিন। সতেজ গাছের পাতা উজ্জ্বল সবুজ বর্ণের হবে। এক বাল্ব-এর গাছ না কিনে বেশ কয়েকটি বাল্বসহ গাছ কিনুন।  একাধিক  বাল্বের গাছ কিনলে যে সুবিধাটি পাবেন সেটি হলো, একটি বাল্ব যদি পঁচে নষ্ট হয়ে যায় তাহলে অন্য বাল্ব থেকে আরেকটি গাছ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে । পরিণত গাছ কিনলে ভালো হয়।

২. মাটি বা মিডিয়া তৈরী :  ভালোমানের মাটি/ শুকনো গোবর (৬০%)। শুকনো গোবর না পেলে কেঁচো সার,কোকোডাস্ট,মোটা বালি,হাড়ের গুড়া(৩০%),ডিমের খোসা কুচি,পচানো চা ব্যবহৃত) পাতা,পাথরকুচি,ইটের কুচি বা কয়লা ( ১০%) ।  উপাদানগুলো মিশিয়ে কমপক্ষে ১৪ দিন রেখে দিন। এতে উপাদানগুলো ভালোভাবে মিশে যাবে। ১৪ দিন পরে গাছ লাগাতে হবে। 

৩. সঠিক পটিং :  গ্রাউন্ড অর্কিডের ক্ষেত্রে  সঠিক পটিং অতি গুরুত্বপূর্ণ । পটিং ঠিক না হলে গাছটি মরে যেতে পারে। গাছের বাল্ব পুরোটা মাটির নীচে না লাগিয়ে খানিকটা মাটির উপর রাখতে হবে এবং শিকড় মাটির ভিতর থাকবে। গাছ লাগানোর পরে  টব ভরে পানি দিন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন, পানি যদি টব থেকে সম্পূর্ণ বের হয়ে যায়, তাহলে আপনার তৈরীকৃত মিডিয়া ঠিক আছে।

৪. উপযুক্ত পরিবেশ :  গ্রাউন্ড অর্কিড ছায়াচ্ছন্ন পরিবেশ পছন্দ করে। এই জাতীয় অর্কিড অতিরিক্ত রোদ সহ্য করতে পারে না। পাতা পুড়ে যায়। অতিরিক্ত বৃষ্টিতে গাছের বাল্ব পচে যায়। ছাদে গাছ রাখলে শেড নেটের নীচে রাখুন। শেড না থাকলে আবহাওয়া অনুযায়ী গাছের পজিশন পরিবর্তন করতে হবে। 

৫. পানি প্রয়োগ :  মাটি শুকিয়ে গেলে পানি দিতে হবে। মাটির উপরের তল যখন পুরোপুরি শুকিয়ে যাবে,তখন পানি দিবেন। 

৬. খাদ্য :  মিডিয়ার মিশ্রণ ঠিক থাকলে তেমন সার দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। পঁচা খৈলের পাতলা পানি দিতে পারেন মাসে একবার। শুকনো মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে। শুকনো গোবর দিতে পারেন মাসে একবার।

৭. রোগ-বালাই ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ : গ্রাউন্ড অর্কিডে তেমন রোগ-বালাই দেখা যায় না। মাসে একবার ছত্রাক আর মাকড় নাশক ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে ইন্ডোফিল এবং এবোম মিশ্রণ করে প্রয়োগ করতে পারেন। মাটি বেশী ভেজা থাকলে গাছের পাতায় মিলিবাগ দেখা দিতে পারে। পাতার উল্টোদিকে নিয়মিত থেয়াল রাখুন। গরমকালে গাছের পাতাসহ পুরো গাছটি নিয়মিত ধূঁয়ে দিন। 

৮. রি-পটিং: রি-পটিং এর আর্দশ সময় হলো জানৃয়ারী থেকে মার্চ মাস। এক্ষেত্রে অধিক বাল্বসহ পুরাতন গাছটি টব থেকে তুলে ফেলুন। পুরানো গাছ তুলে ফেলে মড়া শিকড় ও পাতা পরিস্কার করে নিতে হবে। এরপর পানি দিয়ে ভালোভাবে ধূঁয়ে ফাঙিসাইড মিশ্রিত পানিতে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। উপরের বর্ণিত ( ২ নং) উপায়ে মিডিয়া তৈরী করুন। পুরানো মিডিয়া ব্যবহার করবেন না। সঠিকভাবে পটিং ( ৩ নং) করে গাছ লাগান। টব ভরে পানি দিন। কিছুক্ষণ পরে সমস্ত পানি নেমে গেলে বুঝবেন আপনার তৈরীকৃত মিডিয়া ঠিক আছে। ৭ দিন গাছটি ছায়াযুক্ত জায়গায় রাখুন ( শেডে নীচে রাখলে গাছ ভালো থাকে-শীতের সময় কুয়াশা আর গরমের সময় তাপ থেকে রক্ষা করে)।  গাছে গোড়া যেন নড়েচড়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

৯. অন্যান্য যত্ন: নিয়মিত আগাছা পরিস্কার করুন। মাটি শক্ত হয়ে গেলে খুঁচিয়ে দিন। অনেকসময় টবে ছোট ছোট শামুক ও ব্যাঙের ছাতা জস্মায়। সেগেুলো পরিষ্কার করুন। 

১০. শেষ কথা : নিরাশ হবেন না। গাছ বেঁচে থাকলে অবশ্যই ফুল পাবেন। একটি পরিণত গাছ সারাবছর ফুল দিবে। অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে এই অর্কিড বিরামহীনভাবে ফুল দেয়। গ্রাইন্ড অর্কিডের একেকটা স্টিক দুই/তিন মাসেরও বেশী সময় ফুল দেয়। আলো/তাপমাত্রার পরিবর্তনের সাথে সাথে কিছু গ্রাউন্ড অর্কিডের ফুলের রঙেরও পরিবর্তণ ঘটে।  আর শেষ কথা হলো, অর্কিডটিকে ভালোবাসুন, বিনিময়ে সেও আপনাকে ভালবেসে নিজেকে ফুলে ফুলে সজ্জিত করবে।



Wednesday, January 19, 2022

ভালো অর্কিড কেনার উপায়

ভালো অর্কিড কেনার উপায় 

 


 

ভালো অর্কিড কেনা বা চেনা সহজ নয়।  এটা চর্চা করতে হয়। আমরা অনেকে লোকাল নার্সারী বা অন-লাইন থেকে অর্কিড গাছ কিনে ঠকেছি। অন-লাইনে যেটা হয়-সেটা  প্রতারণা। দেখাবে সুস্হ সবল গাছের ছবি কিন্তুু  ডেলিভারী দিবে দুর্বল গাছ। আপনি অনেক পয়সা খরচ করে অর্কিড কিনলেন, বাসায় এনে পটে বসালেন,কিন্তুু ফুল তো দুরের কথা, শুকিয়ে মরে গেলো। পয়সাও গেলো আবার অর্কিডের শখটাও মরে গেলো । অনলাইনে সবাই প্রতারক নয়। ফেইসবুকে কিছু ভালো গ্রুপ আছে, সেখানে বিক্রেতারা বেশ ভালোমানের অর্কিড বিক্রি করে থাকে। অনেক বিক্রেতার আবার বেশ নাম ডাক আছে। প্রথমে আলোচনা করবো অনলাইন তথা ফেইসবুক থেকে অর্কিড গাছ কেনার ব্যাপারে।

১. গ্রুপে জয়েন করুন্ ।  বিশেষ করে যেসব গ্রুপে অর্কিড বিক্রির জন্য সেল পোষ্ট দেওয়া হয়। 


২. সদস্যদের কমেন্টগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। বিক্রেতার প্রতি সদস্যদের মন্তব্যগুলো মাথায় রাখবেন।


৩. বিক্রেতারা সাধারণত পোষ্টে অর্কিডের ছবি দেয়, মূল্য দেয় না ( কিছু কিছু ক্ষেত্রে) । ম্যাসেন্জারে যোগাযোগ করতে বলে । ছবি থাকলে তা যাচাই করার জন্য সেভ করুন। রেফারেন্স ছবি দেওয়া থাকলে, আসল গাছের ছবি দিতে বলুন। অনেক সময় রেফারেন্স ছবির সাথে বাস্তব গাছের সাথে কোন মিল থাকে না ।

৪. ফুল সহ গাছ কেনার চেষ্টা করবেন। ফুল সহ গাছের দাম বেশ বেশী । অনলাইনে দাম কমানোর চেষ্টা না করাই ভালো । বেশীর ভাগই সৈখিন বিক্রেতা । এক পয়সাও কমায় না। সরি,ভাই পারবো না-বলে দেয়।

৫. হোম আর ক্যাশ-অন-ডেলিভারী নেওয়ার চেষ্টা করবেন। সেক্ষেত্রে যাচাই বাছাইয়ের একটা উপায় থাকে।  কুরিয়ারেও অনেক বিক্রেতারা বেশ ভালো ভাবে প্যাকিং করে দেয়। পটিঙ ছাড়া কিনলে গাছ রোপন করার নিয়মাবলী জেনে নিন। 

অর্কিড কেনার সবচেয়ে সহজ ও নিরাপদ উপায় হলো-নার্সারী । নিজের চোখে দেখে যাচাই করে অর্কিড কিনলে ঠকবেন না, তাই কষ্ট করে হলেও ভালো কোন নার্সারীতে ঢুঁ মারুন। ঢাকাতে বেশ কয়েকটি অভিজাত নার্সারী আছে যেমন, আগাঁরগাওয়ের সবুজ-বাংলা নার্সারী, তেঁজগাও-গুলশান লিংক রোডের ব্রাক নার্সারী। এখানে অর্কিডের মূল্য বেশ চড়া। তাছাড়া ছোট[বড় আরও বেশ কয়েকটি নার্সারী আছে আঁগারগায়ে। আর যদি পাইকারী হারে অধিক সংখ্যক অর্কিড কিনতে চান, তাহলে সাভারে যেতে পারেন।

নার্সারী  থেকে  কেনার ক্ষেত্রে : ১. শিকড় পরীক্ষা করুন। দৃশ্যমান শিকড় দেখে অর্কিডের   হেল্থ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারনা পাবেন।স্বাসহ্যকর অর্কিডের শিকড় সাধারণত সাদা বা সবুজ রঙের হবে। অন্যদিকে খয়েরী এবং নরম শিকড় অতিরিক্ত পানি দেওয়ার ফল। প্রয়োজনে  পট থেকে অর্কিড গাছটি বের করে  ভালোভাবে পরীক্ষা করুন। অনেকসময় হলুদ পাতা দুর্বল অর্কিড নির্দেশ করে। কিন্তুু এটা সবসময়  ঠিক নাও হতে পারে। অর্কিডের উপরের দিকের পাতা যদি উজ্জ্বল ও গাঢ় সবুজ রঙের হয় এবং নিচের দিকের পাতা হলদেটে হয়, তাহলে এটা স্বাভাবিক। সাধারণত বয়স্ক পাতা হলুদ হয়ে পড়ে যায়, নতুন পাতা গজানোর জন্য। যদি গাছের সব পাতা যদি হলুদ দেখেন তাহলে সেটা হয়তো পানির অভাবে অথবা অতিরিক্ত পানির দেওয়ার জন্য। হলুদ দাগ থাকলে সেটা পোকা-মাকড়ের আক্রমণ হতে পারে। মিলি বাগস বা ম্পাইডার বাগস দেখার জন্য পাতার উপরে-নীচে সাদা গুড়া-গুড়া আছে কিনা দেখুন।

২. ফুল :  অর্কিড কেনার সময় ফুল আছে কিনা-সেটা দেখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় । সবসময় চেষ্টা করবেন ফুলসহ অর্কিড কেনার। ফুলগুলো সবল এবং স্পাইকের ( ডাটা) সাথে দৃঢ়ভাবে বসানো কিনা-ভালো করে লক্ষ্য করুন। কলিসহ দুই-একটা স্পাইক আছে কিনা লক্ষ্য করুন-এতে কেনার পর আরো ফুল পাবেন। 

৩. শক্ত স্পাইক:  শক্ত স্পাইক বা ডাটা ফুলকে দৃঢ়ভাবে মেলে ধরে। স্পাইক যেন খাড়া থাকে এবং ফুলের ভার বহন করতে সক্ষম। দুর্বল গাছে সাধারণত দুর্বল স্পাইক থাকে-এই স্পাইকগুলো ফুলের ভারে নীচের দিকে বেঁকে যায়। 

৪. গন্ধ নিন: নাকের কাছে এনে গন্ধ শুকুন। যদি পঁচা গন্ধ পান তাহলে বুঝবেন, গাছটি পঁচে যাওয়ার সম্ভবনা বেশী।





Saturday, April 7, 2018

দেশী অর্কিড: রিনকসটাইলিস

দেশী অর্কিড:  রিনকসটাইলিস

এই অর্কিডের পাতা লম্বা ও সরু। ছড়া এক থেকে দেড় হাত ঝুলে থাকে। গাছের গা বেয়ে ৫/৬টি ছড়া নামে। ফুলের পাপড়ি সাদা, গোলাপীর ভিতর বেগুনি ফুটকি দেওয়া থাকে। এটাকে ফক্সটেইল অর্কিডও বলা হয়ে থাকে। সংস্কৃতিতে এই ফুল দ্রৌপদী মালা নামেও পরিচিত। বাংলাদেশের সিলেট, চট্টগ্রাম,ময়মনসিংহ ও দিনাজপুরের বনে এই অর্কিড গাছের ডালে ঝুলে থাকে।

রিনকসটাইলিস কমলা, গাঢ় লাল,হলুদ ও বেগুনী রঙের হতে পারে। মায়ানমার, ব্যাংকক,ভারতের আসাম রাজ্য,সিংগাপুরে এই ফুল প্রচুর ফোটে।

 মার্চ ও এপ্রিলে ফুল আসে।

Thursday, April 5, 2018

দেশী অর্কিড-পিয়ারারডি

 বাংলাদেশের অনেক জায়গায় বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও সিলেটে বড় বড় রেইনট্রি বা বহুবর্ষজীবি গাছগুলোতে এই অর্কিডগুলো ঝুলে থাকতে দেখা যায়। 

পাতা চিকন ও ডাল সরু ও লম্বা । শীতকালে ডালে কোন পাতা থাকে না। বর্ষাকালে নতুন পাতায় ভরে যায় ডাল। বসন্তকালে ফুলে ফুলে ভরে যায় লম্বা ডালগুলো । ছোট ছোট ফুলগুলোর সৌন্দর্য অতুলনীয়। গোলাপী ও হাল্কা গোলাপী রঙের এই ফুল আকৃষ্ট করে সবাইকে। 

এই অর্কিডগুলো বাড়ির প্রবেশ পথে ঝুলিয়ে রাখতে পারেন। অতুলনীয় সৌন্দর্যে আপনাকে এবং আপনার অতিথিকে স্বাগত জানাবে এই অর্কিড। তাছাড়া হোটেল, দোকান-এই অর্কিড শোভা বর্ধন করে।

গাছের ডালে ঝুলিয়ে দিলে, কিংবা নারকেলের ছোবা, টবে, বাস্কেটে রাখলে বর্ষাকালে শিকড় গাছের ডাল, নারকেলের ছোবা, বাষ্কেট আঁকড়ে ধরে গাছের শক্তি বাড়ায়।
খোয়া বা কাঠ কয়লার প্রয়োজন হয় না। টব বা বাস্কেটে রাখলে অবল্বনের জন্য প্রয়োজন হয়। বসন্তকালে ফুলে ফুলে ভরে যাবে ডালগুলো।


এই অর্কিড ভারতের হিমালয়, নেপাল,ভূটান ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর বনে বনে  পাওয়া যায়।
অর্কিডের যতœ: পানি ও সার নিয়মিত দিলে ফুল টিকে অনেকদিন। ফুলে পানি দিলে ফুল নষ্ট হয়ে যায় তাড়াতাড়ি। পানি স্প্রে করতে হবে শিকড়ে,ফুলে নয়। ফুল ঝরে গেলে লম্বা ছড়াগুলো কাটবেন না। বসন্তের শেষে বৃষ্টিতে ছড়াগুলোতে নতুন চাড়া গজাবে শিকড়সহ।

চারাগাছ শিকড়সহ গাছের ডালে বেঁধে দিলে সারা বর্ষাজুড়ে বড় হবে ও বসন্তে ফুলে ফুলে ভরে যাবে।

Monday, March 19, 2018

অনসোডিয়াম

এই অর্কিড ফুলটি আমাদের দেশী নয়। অর্কিডটি এসেছে মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা থেকে। প্রায় ৩০০ প্রজাতির অনসোডিয়াম আছে।  বাংলাদেশে যে প্রজাতির অনসোডিয়াম বেশী দেখা যায়,সেটির ফুল হলুদ বর্ণের। একেকটি ফুল কাছ থেকে দেখলে মনে হয় যেন হলুদ ঘাগড়া পড়া নৃত্যরত কিশোরী। ইংরেজীতে এই অর্কিডের একটি চমৎকার নাম আছে-‘ড্যান্সিডল’। থাইল্যান্ডে এই ফুলের ডিজাইন অনুসরণ করে ইমিটেশনের বা সোনার গহনা তৈরী করা হয়।


১৮-২০ মাস বয়সী গাছে ফুল আসতে শুরু করে। পুষ্পদন্ডগুলো সরু ও লম্বা। প্রতিটি পুষ্পদন্ডে  ২০থেকে ৩০ টি ছোট ছোট ফুল ধরে। সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে ১০-১২ সপ্তাহ পর পর ফুল আসে।

আলো : উজ্জল ও  ইন-ডাইরেক্ট আলো প্রয়োজন ।  খোলা জানালার পাশে রাখতে পারেন। জায়গা না থাকলে ঘরের ভিতর কৃত্রিম আলোতেও ভালো থাকে।

পানি:  গাছ বাড়ার সময় মধ্যম মানের আদ্রতা প্রয়োজন। অতিরিক্ত পানি দেওয়া যাবে না

অনসোডিয়াম জাতের অন্যান্য ফুলগুলো হলোঃ

1. Oncidium Taka
2. Oncidium Larn Ceanum
3.Oncidium Pulchellum
4.Oncidium Caeser ( Roman flower)

দক্ষিণ আমেরিকায় লাল, খয়েরী,বেগুনী ও গোলাপী অর্কিড দেখা যায়। 

Saturday, December 3, 2016

অর্কিড বিষয়ক প্রশ্ন ও উত্তর

অর্কিড বিষয়ক প্রশ্ন ও উত্তর

১. ঘরে কোথায় অর্কিড রাখা ভালো?
অর্কিড রাখতে হয় ঘরের ভিতরে জানালার পাশে। দক্ষিণ কিংবা পূর্বমুখী জানালা বেশী উপকারী। পশ্চিমমুখী জানালায় সাধারণত বিকেলের দিকে গরম অনূভুত হয় আর উত্তররর জানালা বেশ অন্ধকার থাকে। জানালায় পর্দা থাকা ভালো, এতে মাত্রা সহনীয় থাকে। অতিরিক্ত আলোয় পাতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়- তাই ঋতুভেদে অর্কিড গাছের অব®হান পরিবর্তন করা বাঞ্ছনীয়। গাছকে জানালার কাছে বা দুরে সরিয়ে আলোর তারতম্য ঘটানো যায়। মনে রাখতে হবে অর্কিডের পাতা যেন জানালার গ্লাসকে স্পর্শ না করে। শীতকালে অর্কিডের পাতা জানালা স্পর্শ করলে জমে যেতে পারে।

পাতার রঙ দেখে বোঝা যায় গাছটি সঠিক আলো পাচ্ছে কি না? পাতার রঙ যদি গাঢ় সবুজ হয় তাহলে গাছটি পর্যাপ্ত আলো পা্েছ না। ঘাসের মতো সবুজ রঙ ( হাল্কা অথবা মিডিয়াম সবুজ সাথে হলদে আভা ) হলে বুঝতে হবে অর্কিড গাছটি ফুল ফোটাঁনোর জন্য পর্যাপ্ত আলো পাচ্ছে।

২. অর্কিডে কিভাবে পানি দিব?

অর্কিডে অতিরিক্ত পানি দেওয়ার চেয়ে খুব কম মাত্রায় দেওয়া ভালো । অতিরিক্ত পানিতে শিকড় পচে যায়। অতিরিক্ত পানির ফলে গাছের পাতা ঝরে যেতে পারে এমনকি অর্কিড গাছটি মরেও যেতে পারে। সবচেয়ে প্রচলিত মতে গাছ শুকিয়ে যাওয়ার এক দিন পূর্বে পানি দিনর্।  শুষ্ক অর্কিডসহ টবের ওজন সাধারণত কম হবে ভেজা থাকার চেয়ে। ভেজা ও শুকনো টবের ওজন ভালোভাবে বুঝতে পারলে পানি দেওয়া সহজ হয়। একটি পেন্সিল চোখা করে ছেঁচে নিন এবং পেন্সিলটি টবের ভিতর মিডিয়াতে ঢুকিয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। যদি পেন্সিলসহ শীশটি আর্দ্র মনে হয়, তাহলে পানির প্রয়োজন নেই। টবের মিডিয়ামের ভিতর হাত দিলে যদি আর্দ্রতা অনূভূত হয়, তাহলে পানি দেওয়ার প্রয়োজন নাই।

সকালে পানি দেওয়া সবচেয়ে ভালো। সকালে পানি দিলে সারাদিনে গাছটি পযাপ্ত পানি টেনে নিবে এবং দিনের তাপমাত্রায় অতিরিক্ত পানি তাপে শোষিত হবে। রাতে পানি দেওয়া উচিৎ নয়। এতে ফাঙাসের উপদ্রব হতে পারে। ঘরের তাপমাত্রা যদি বেশী হয় এবং আর্দ্রতা কম হয় (সাধারণত গ্রীষ্মকালে) তাহলে বেশ কয়েকবার পানি দেওয়া যেতে পারে। ঘওে পালিত অর্কিডের ক্ষেত্রে টবসহ অর্কিডটি রান্না ঘরের সিংকে মিনিট সাতেক ডুবিয়ে রেখে তুলে ফেলুন।

কিভাবে ভালো অর্কিড কিনবো?

একটি অর্কিড কেনার সময় যেসব বিষয়ে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে সেগুলো হলো:-
(১) মিডিয়াতে অর্কিডটির শিকঁড় থাকতে হবে। গাছটি যেন মিড়িয়াতে শক্তভাবে দাড়িয়ে থাকে। চারা কেনার চেয়ে কলিসহ ফুল ফোঁটা অর্কিড গাছ কেনা ভালো। পাতার রঙ মধ্যম সবুজ কিনা দেখতে হবে। দৃশ্যমান কীট-পতংগমুক্ত হতে হবে।

(২) ফুল যেন টাটকা থাকে । ফাংগাসের স্পট থাকা চলবে না। সব ফুল ফঁটে গেছে, এরকম অর্কিডের চেয়ে দু-একটি কলি রয়েছে এরকম অর্কিড গাছ কেনাই শ্রেয়। সব ফুল ফোটা থাকলে, ফুলের আয়ুকাল বোঝা যায় না। পাত্র যেন পরিষ্ক্রা পরিচ্ছন্ন থাকে। টবের গায়ে শ্যাওলা থাকলে পরিষ্কার করে দিতে বলুন বিক্রেতাকে।

(৩) কেনার সময় বিক্রেতার সাথে দরকষাকষি করুন। কখনও একদামে কিনবেন না।

অর্কিড কি পরগাছা জাতীয় গাছ ?

অর্কিড পরগাছা নয় । অর্কিড পুরানো গাছ, পাথর খন্ড বা গাছের ডাল আঁকড়ে ধরে আদ্রতা শুষে নেয়। অর্কিড পানি,বাতাস ও আলো থেকে খাবার তৈরী করে। অর্কিডকে যে গাছ ধারন করে, তা মরে যায় না।এ থেকেই প্রমাণিত হয় অর্কিড পরগাছা নয়।

অর্কিড পালন কি খুবই কঠিন ?

আপনার যদি একখন্ড খোলা বারান্দা বা ছাদ থাকে , তাহলে খুব সহজেই অর্কিড চাষ করা যায়।
অর্কিড চাষের জন্য প্রয়োজন আলো, বাতাস আর তরল সার আর যতœ। নিয়মকানুন সঠিকভাবে
জানলে অর্কিড সহজেই চাষ করা যায়।

আমাদের দেশে কোন অর্কিডগুলো জনপ্রিয়?

আমাদের দেশে বনে-বাদাড়ে আম, বেল, জাম,তেতুল ও বিশাল আকারের পুরানো রেইনট্রি-তে দেশী অর্কিড ঝুলে থাকতে দেখা যায়। দেশী অর্কিডের মধ্যে রয়েছে ভ্যান্ডা,পিয়েরারডি,ভ্যান্ডাটারেট,এরাডাউস,ফক্সটেইল। এই অকিডগুলো বাগানের বেড়া দেওয়ার জন্য আর্দশ।মার্চ মাস থেকে ফুল ফোঁটা শুরু হয়।

বিদেশী অর্কিডগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্যাটালিয়া, অনসোডিয়াম,ভ্যান্ডা,ফেলোনপসিস,ড্যান্সিংডল ইত্যাদি। 

অর্কিড  কি জংগলী ফুল?

বেশ কিছু অর্কিড এসেছে জংগল থেকে। বিভিন্ন দেশে তাদের নিজস্ব অর্কিড আছে। থাইল্যান্ড,মালয়েশিয়া,ভারত,ভূটান,বাংলাদেশের নিজস্ব অর্কিড রয়েছে।
আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড-এর নিজস্ব অর্কিড রয়েছে।



Tuesday, November 1, 2016

মোকারা অর্কিড লালন পালন ও পরিচর্যা

মোকারা একটি হাইব্রিড অর্কিড। বাংলাদেশে ড্যানড্রবিয়ামের পর মোকারা অর্কিড বেশ জনপ্রিয়। এই অর্কিড লালন পালন ও পরিচর্যা বেশ সহজ । নাসারীতে একটি  পূর্ণবয়স্ক ফুল ধরা অর্কিডের দাম ৬০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে। ঠিক মতো পরিচর্যা করতে পারলে সারা বছরই ফুল দেয়। মোকারা অর্কিড কেনার সময় এর মূল ও ফুলের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে । মূল যেন সু®হ্য সবল থাকে। ফুল সহ অর্কিড কেনাই ভাল।



ঘরে ও অফিসে সহজেই মোকারা অর্কিড পালন করা যায়। সাধারণত পূর্বমুখী জানালার পাশে রাখতে পারলে সবচেয়ে ভাল হয়। ভোরের প্রথম কিরনে এই অর্কিড জীবণীশক্তি লাভ কওে ।

তাপমাত্রা : এই অর্কিড দিনের বেলায় বেশী তাপ সহ্য করতে পারে না । দিনের বেলায় সাধারণত ১৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এবং রাতের বেলায় ১৩ ডিগ্রিী সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা এই অর্কিডের জন্য আর্দশ। বাংলাদেশে সাধারণত শীতকালে এই তাপমাত্রা থাকে। চিন্তার কারণ নেই, বাংলাদেশের তাপমাত্রাও এই অর্কিডের জন্য সহনীয়। আর্দ্রতা বেশ পছন্দ মোকারা অর্কিডের। ৮০% আদ্রতা এই অর্কিডের জন্য আর্দশ।




পানি দেওয়া: অন্যান্য প্রজাতির অর্কিডের চেয়ে মোকার পানি একটু বেশী লাগে। সকালে পানি দিন। বেশ কয়েক মিনিট ধরে গাছের শিকড় পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিন। গরমকালে সপ্তাহে বেশ কয়েকবার পানি দিতে হবে। চারা গাছে পানি দেওয়ার খেয়াল রাখতে হবে যেন শিকড়ে পানি জমে না থাকে। শীতকালে পানির প্রয়োজন কম পড়ে। তবুও হাত দিয়ে শিকড স্পর্শ করলে যদি শুকনো মনে হয়, তাহলে পানি দিতে হবে।

সার : সার প্রযোগে এই প্রজাতির অর্কিডের বৃদ্ধি ভাল হয়। গরমের সময় সপ্তাহে একদিন সার দেওয়া ভালো। শীতকালে দুই বা তিন সপ্তাহ পরপর সার দেওয়া যেতে পারে, কারণ শীতকালে অর্কিডের বৃদ্ধি কম হয়। ২০ ভাগ নাইট্রোজেন(ইউরিয়া), ২০ ভাগ ফসফরাস ও ২০ ভাগ পটাশিয়ামের তরল মিশ্রন এই অর্কিডের জন্য আর্দশ। সার দেওয়ার সময় বোতলের লেবেলের নির্দেশাবলী অনূসরণ করুন।

পট বা টব পাল্টানো: মোকারা অর্কিড শিকড় নাড়াচাড়া পছন্দ করে না। কিন্তুু শিকঁড় যদি পটের বাইরে চলে যায় অথবা মিডিয়া যদি পুরানো ও ভেঙে যায় তাহলে সে ক্ষেত্রে পট পাল্টানো জরুরী। টব বড় হলে ভাল হয়।